🔹 মধ্যযুগে কবিরা যখন দেব-দেবীদের কেন্দ্র করে কাব্য রচনা করছেন, ঠিক সেই সময় সপ্তদশ শতকে দৌলত কাজী সেই প্রথা ভেঙে নর-নারীদের অবলম্বন করে তাঁর কাহিনী রচনা করলেন - যা মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে প্রথম।
🔹 দৌলত কাজী তাঁর কাব্যে দেববাদ নয়, মানবতাবাদের জয়গান গেয়ে ঘোষণা করেছেন ⤵️
“নর বিনে চিনি নাহি কিতাব কোরান।
নর সে পরম দেব তন্ত্র মন্ত্র জ্ঞান।।
নর সে পরম দেব নর সে ঈশ্বর।
নর বিনে ভেদ নাহি ঠাকুর কিঙ্কর”।।
🔹 ডঃ সুকুমার সেনের মতে 👉 “বিদ্যাসুন্দর কাব্যের বাহিরে লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতা - আমাদের জ্ঞাতমতে হইতেছেন দৌলত কাজী”।
🔹 গোপাল হালদার তাঁর ‘বাংলা সাহিত্যের রূপরেখা” গ্রন্থে বলেছেন 👉
“বাংলা সাহিত্যের প্রথম স্মরণীয় ধর্ম সংস্কার মুক্ত মানবীয় প্রণয় কাব্য এবং রোসাঙের রাজসভা এ ধারার উদ্ভব ক্ষেত্র”।
আরও পড়ুন - আলোচনা : প্রথম মুদ্রিত “মনসামঙ্গল” কাব্য ও রচয়িতা ।
🔹 তিনি চট্টগ্রামের রাউজান থানার অন্তর্গত সুলতানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
🔹 দৌলত কাজী আরাকান রাজ শ্রীসুধর্মার রাজসভায় পরম সমাদরে স্থান করে নেন।
🔹 দৌলত কাজী ছিলেন বিখ্যাত সুফী সাধক মইনুদ্দীন মহম্মদ চিস্তীর অনুগামী।
🔹 তিনি মিয়াসাধনের “মৈনা-কো-সত” কাব্য থেকেই তাঁর “সতীময়না” কাব্যের উপাদান সংগ্রহ করেন।
🔹 আরাকান সমরসচিব আশরফ খানের উপদেশে ১৬২১-১৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে কোন এক সময় তিনি কাব্যটি রচনা করেন।
🔹 “সতীময়না” কাব্যের দুই তৃতীয়াংশ রচনার পর কাব্যটি অসম্পূর্ণ রেখে তিনি মারা যান।
🔹 পরে দৌলত কাজীর অসম্পূর্ণ কাব্য “সতীময়না” প্রসিদ্ধ কবি সৈয়দ আলাওল প্রধানমন্ত্রী সুলেমানের নির্দেশে ১৬৫৯ খ্রিষ্টাব্দে কাব্যটি সমাপ্ত করেন।
আরও পড়ুন - আলোচনা : বাংলা ভাষার প্রথম চৈতন্য জীবনীগ্রন্থ ।
“সতীময়না” কাব্য : দৌলত কাজী
🔹 রোসাঙ্গনগর কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত।🔹 ময়নামতীর স্বামী 👉 লোরক।
🔹 রাজা লোরক মহাদেবী কে রাজ্যপাট সমর্পণ করে বন বিহারে গিয়েছিলেন।
🔹 চন্দ্রাবতীর পিতা 👉 মোহরা। তিনি শূর বংশীয় রাজা।
🔹 কাব্যে নপুংসক রাজা 👉 বামন।
🔹 চন্দ্রানী বছরে ২ বার দেবী দর্শনে দেবালয়ে যান।
🔹 কাব্যে ব্রতশীলা 👉 বুদ্ধিশিখার ছদ্মনাম।
🔹 লোর - বামন যুদ্ধে রাজা লোরের সারথি ছিলেন 👉 মিত্রকণ্ঠ।
আরও পড়ুন - আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ।
🔹 কাব্যে সতীময়নার বারমাস্যা আষাঢ় মাসের বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়েছে।
🔹 সতীময়নার বারমাস্যা রত্না মালিনীর জবানীতে ব্যক্ত হয়েছে।
🔹 কবি বারমাস্যা বর্ণনায় জৈষ্ঠ্য মাসের বর্ণনা অসমাপ্ত রেখে পরলোকগমন করেন।
🔹 সর্পাঘাতে মৃত চন্দ্রানীর প্রাণ দান প্রসঙ্গে যোগী 👉 স্বর্ণষ্ঠীব উপাখ্যানের উল্লেখ করেছেন।
🔹 ১২ বছর নারী দাস হয়ে থাকার বিনিময়ে ঋষিবর চন্দ্রানীর প্রাণ ফিরিয়ে দিতে সন্মত হয়েছিলেন।
🔹 দেবরাজ ইন্দ্রের অভিশাপে ২ যক্ষ পক্ষী রূপে পাতালপুরীতে এসেছিলেন।
🔹 লোর চন্দ্রানীর পুত্রের নাম 👉 প্রচণ্ডতপন।
🔹 চন্দ্রপ্রভার সাথে প্রচণ্ডতপনের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
0 Comments