Subscribe Us

জীবনানন্দ দাশ : চিত্ররূপময় কবি

জীবনানন্দ

“আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে,

কথায় না বড় হয়ে, কাজে বড় হবে।”

                                             - কুসুমকুমারী দাশ


🔹 সত্যানন্দ দাশ (১৮৬৩-১৯৪২) সম্পাদিত ‘ব্রহ্মবাদী’ পত্রিকায় কুসুমকুমারী দাশের (১৮৮২-১৯৪৮) ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। 

🔹 আসলে কুসুমকুমারী দাশের ঘরেই ছিল সেই ‘আদর্শ ছেলে’। গম্ভীর স্বল্পবাক জীবনানন্দ দাশ, ডাকনামে ‘মিলু’ ছিলেন সত্যানন্দ দাশ ও কুসুমকুমারী দাশের জ্যেষ্ঠ সন্তান।

চিত্ররূপময় কবি জীবনানন্দ দাশ :


🔹 জন্ম 👉 ১৮ই ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯, বাংলাদেশের বরিশাল শহরে।

🔹 পিতা 👉 সত্যানন্দ দাশগুপ্ত।

🔹 মাতা 👉 কুসুমকুমারী দেবী।

🔹 ডাকনাম 👉 মিলু।

🔹 মৃত্যু 👉 ২২শে অক্টোবর ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ট্রাম দুর্ঘটনায়।


Suggested Page: সাহিত্য সম্রাট রচিত উপন্যাস সম্পর্কে বিশদ আলোচনা ।



🔹 মাতা কুসুমকুমারী দেবীর কাছ থেকেই কবি কবিতা রচনার প্রেরণা পান।

🔹 ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তিনি ৯৬ টি  গল্প লিখেছিলেন, কিন্তু সেগুলি প্রকাশিত হয়নি।

🔹 কবির প্রথম কবিতা - “বর্ষ আবাহন” প্রকাশিত হয় ‘ব্রহ্মবাদী’ পত্রিকায়।

🔹 কবির প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ - “ঝরা পালক”(১৯২৭)।

🔹 কবির রচিত প্রথম ছোটগল্প - “ছায়ানট”, ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে রচিত।

🔹 তাঁর প্রথম উপন্যাস - “সুতীর্থ” ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে রচিত কিন্তু প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে।


জীবনানন্দ দাশ রচিত কাব্যগ্রন্থ :

১. ঝরা পালক ১৯২৭

২. ধূসর পান্ডুলিপি ১৯৩৬

৩. বনলতা সেন ১৯৪২

৪. মহাপৃথিবী ১৯৪৪

৫. সাতটি তারার তিমির ১৯৪৮

৬. রূপসী বাংলা ১৯৫৭

৭. বেলা অবেলা কালবেলা ১৯৬১

৮. অমিষাশী তরবার ১৯৬৯

৯. সুদর্শনা ১৯৭৩

১০. মনোবিহঙ্গম ১৯৭৯

১১. আলো পৃথিবী ১৯৮১

Suggested Page: রবীন্দ্রোত্তর কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ।


জীবনানন্দ দাশ রচিত উপন্যাস :

১. মাল্যবান ১৯৭৩

২. সুতীর্থ ১৯৭৩

৩. জলপাইহাটি ১৯৮১


🔹 কবির জীবদ্দশায় উপন্যাসগুলি প্রকাশিত হয়নি। পরে দেবেশ রায়-র সম্পাদনায় “জীবনানন্দ সমগ্র” এগুলি প্রকাশিত হয়।

🔹 বুদ্ধদেব বসু কবি জীবনানন্দ দাশকে ‘নির্জনতম কবি’ বলেছেন।


🔹 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনানন্দ দাশকে ‘চিত্ররূপময় কবি’ বলেছেন।


🔹 শুদ্ধসত্ত্ব বসু জীবনানন্দ দাশের “বনলতা সেন” কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে বলেছেন - বনলতা সেন বাংলা সাহিত্যে নিঃসন্দেহে অমর সৃষ্টি এবং রবীন্দ্রনাথের পর এত সুন্দর ও সার্থক রোম্যান্টিক কবিতা আর সৃষ্টি হয়নি


“ঝরা পালক” (১৯২৭) 

প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ এটি। এই কাব্যগ্রন্থে ৩৫ টি কবিতা সংকলিত হয়েছে।
এই কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাটি হল - “আমি কবি - সেই কবি”
এই কাব্য থেকেই কবি তাঁর ‘গুপ্ত’ পদবি বাদ দেন।


Suggested Page: নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ।


“ধূসর পাণ্ডুলিপি”(১৯৩৬)

কাব্যগ্রন্থটি কবি বুদ্ধদেব বসু কে উৎসর্গ করেন। এই কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে ১৫ টি অপ্রকাশিত কবিতা যুক্ত হয়েছিল।
এই কাব্যগ্রন্থ পাঠ করেই বুদ্ধদেব বসু কবিকে ‘প্রকৃতির কবি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।


“বনলতা সেন” (১৯৪২)

১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে “এক পয়সার একটি” গ্রন্থমালার অন্তর্ভুক্ত হয়ে কবিতা ভবন থেকে প্রকাশিত হয়।
কাব্যের ৫৩ সংখ্যক কবিতাটি হল নামকবিতা।


“রূপসী বাংলা” (১৯৫৭)

কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুর পর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ এটি। 
কবির মৃত্যুর পর তাঁর ভাই অশোকানন্দ দাশ মহাশয় কাব্যটি প্রকাশ করেন।


জীবনানন্দ দাশ কর্তৃক উৎসর্গকৃত রচনাসমূহ :

১. ঝরা পালক 👉 শোভনা

২. ধূসর পান্ডুলিপি 👉 বুদ্ধদেব বসু

৩. মহাপৃথিবী 👉 প্রেমেন্দ্র মিত্র এবং সঞ্জয় ভট্টাচার্য

৪. সাতটি তারার তিমির 👉 হুমায়ুন কবীর

Suggested Page: শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের​ উৎসর্গকৃত রচনাসমূহ ।


🔹 ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের মৃত্যু হলে জীবনানন্দ দাশ তাঁর স্মরণে  'দেশবন্ধুর প্রয়াণে' নামক একটি কবিতা রচনা করেন, যা বঙ্গবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 
পরবর্তী কালে এই কবিতাটি তাঁর প্রথম কাব্য সংকলন “ঝরা পালক”-র  অন্তর্ভুক্ত হয়।


🔹 বুদ্ধদেব বসু জীবনানন্দ দাশের "ধূসর পান্ডুলিপি” 
প্রসঙ্গে বলেছেন 👉 “আধুনিক কবিদের মধ্যে জীবনানন্দ বিশেষ অর্থে প্রকৃতির কবি”


🔹 জীবনানন্দ দাশ এমন একজন কবি যিনি জীবদ্দশায় প্রশংসা খুব কমই পেয়েছিলেন, বরং সমালোচকদের সমালোচনায় জর্জরিত হয়েছিলেন বেশি। উনি মূলত জনপ্রিয় হন উনার মৃত্যুর বেশ কিছু সময় পর। যখন কবির মূল্যবান বিভিন্ন রচনাগুলি পত্র পত্রিকা এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হতে শুরু করে।


Suggested Page: বাংলা সাহিত্যে​ ত্রয়ী বা ট্রিলজি ।

Post a Comment

0 Comments