Subscribe Us

পূর্ণেন্দু পত্রী : কথোপকথনের কবি

আসল নাম – পূর্ণেন্দুশেখর পাত্রী ।

জন্মস্থান – ২ রা ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার নাকোলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ।

পিতা – পুলিনবিহারী পাত্রী ।

মাতা – নির্মলা দেবী ।

ছদ্মনাম – সমুদ্র গুপ্ত ।

শিক্ষাজীবন – ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে ভর্তি হন কমার্শিয়াল আর্টের ছাত্র হিসেবে ।

মৃত্যু – ১৯ শে মার্চ ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৬৬ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন ।


আরও পড়ুন : আলোচনা : বাংলার মপাসাঁ সম্পর্কে  ]



কলকাতায় অবিভাবক কাকা নিকুঞ্জবিহারী পাত্রীর চলচ্চিত্র পত্রিকা ‘চিত্রিতা’ এবং সাহিত্য পত্র ‘দীপালি’-তে তাঁর আঁকা ও লেখার সূচনা হয় ।


১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “একমুঠো রোদ” প্রকাশিত হয় ।


১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস “দাঁড়ের ময়না” । এই উপন্যাসের জন্য তিনি মানিক পুরস্কার লাভ করেন ।


সাহিত্য রচনার পাশাপাশি তিনি একজন সুদক্ষ চিত্র পরিচালকও ছিলেন । ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রেমেন্দ্র মিত্রের গল্প অবলম্বনে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র “স্বপ্ন নিয়ে” মুক্তি পায় ।


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাহিনী অবলম্বনে পূর্ণেন্দু পত্রী “স্ত্রীর পত্র”  ও “মালঞ্চ” চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন ।


“স্ত্রীর পত্র” চলচ্চিত্রটির জন্য তিনি তাসখন্দ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার অর্জন করেন ।


আরও পড়ুন : “মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে”-র কবি সম্পর্কে  ] 



১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে সমরেশ বসুর কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত তাঁর “ছেঁড়া তমসুক” চলচ্চিত্রটি একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছিল ।


পূর্ণেন্দু পত্রীর সামগ্রিক সাহিত্য কর্মের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিদ্যাসাগর পুরস্কারে ভূষিত করে ।


বাগনানের বিশিষ্ট কমিউনিস্ট নেতা অমল গাঙ্গুলীর সংস্পর্শে এসে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির একজন সক্রিয় সদস্য হন ।


আরও পড়ুন : বাংলার বায়রন সম্পর্কে  ] 


পূর্ণেন্দু পত্রী রচিত কাব্যগ্রন্থ :

একমুঠো রোদ ১৯৫১
শব্দের ঠিকানা ১৯৭৫
তুমি এলে সূর্যোদয় হয় ১৯৭৬
আমিই কচ আমিই দেবযানী ১৯৭৭
হে সময় অশ্বারোহী হও ১৯৭৯
আমাদের তুমুল হৈ-হুল্লা ১৯৮০
প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগন ১৯৮০
গভীর রাতের ট্রাঙ্ককল ১৯৮১
জেগে আছি বীজে বৃক্ষে ফুলে ১৯৮৬


ছোটদের জন্য রচিত গ্রন্থ

আলটুং ফালটুং
দুষ্টুর রামায়ণ
জাম্বো দি জিনিয়াস
জুনিয়র ব্যোমকেশ
ম্যাকের বাবা খ্যাঁক
ইল্লিবিল্লী

আরও পড়ুন : সুচিত্রা ভট্টাচার্য সম্পর্কে  ] 



পূর্ণেন্দু পত্রী কলকাতা সম্বন্ধে প্রায় ডজন খানেক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন । এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –

১. কলকাতার রাজকাহিনী
২. এক যে ছিল কলকাতা
৩. ছড়ায় মোড়া কলকাতা
৪. কলকাতার আদিপর্ব 
৫. কী করে কলকাতা হলো
৬. পুরনো কলকাতার কথাচিত্র
৭. কলকাতার প্রথম


চলচ্চিত্রায়ন : পরিচালনা

১. স্বপ্ন নিয়ে ১৯৬৬ 
২. স্ত্রীর পত্র ১৯৭২ (চিত্রনাট্য)
৩. ছেঁড়া তমসুক ১৯৭৪
৪. অবনীন্দ্রনাথ ১৯৭৬
৫. পটচিত্র ১৯৭৭ (তথ্যচিত্র)
৬. মালঞ্চ ১৯৭৯
৭. কালীঘাট ১৯৮১ (তথ্যচিত্র)
৮. গীতগোবিন্দম্ ১৯৮১
৯. ছোটো বকুলপুরের যাত্রী ১৯৮১
১০. ক্ষীরের পুতুল ১৯৮২ (তথ্যচিত্র)


আরও পড়ুন : পদাতিক কবি সম্পর্কে  ]



পূর্ণেন্দু পত্রীর রচিত ২ টি কাব্যনাট্য – 
    ১. আমরা আবহমান ধ্বংসে ও নির্মাণে
    ২. নন্দিনীর কাছে পৌঁছাতে না পারার কারণ


পূর্ণেন্দু পত্রী “আমার ছেলেবেলা” নামে একটি স্মৃতিকথাও রচনা করেন।


বাংলা সাহিত্যে কথোপকথন কবিতা রচনায় পূর্ণেন্দু পত্রী সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।


জীবনের শেষ পর্বে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি গবেষণার কাজ শুরু করেন, তাঁর মৃত্যুর পূর্বে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রথম খণ্ড “বঙ্কিম যুগ” প্রকাশিত হয় ।

Post a Comment

0 Comments