Subscribe Us

সত্যজিৎ রায় : শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক

            ✳️ সত্যজিৎ রায় ✳️

               (১৯২১ - ১৯৯২)



Srestho-Chitro-Porichalok-Satyajit-Ray

“এই পৃথিবীতে বাস করে সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র না দেখা চন্দ্র-সূর্য না দেখার মতোই অদ্ভুত ঘটনা”।


জন্ম ➡️১৯২১ সালে ২৩শে এপ্রিল, বিখ্যাত রাায়চৌধুরী বংশে। 

⏺️ তৎকালীন বাংলায় মেধা_মননে জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুুর পরিবারের সাথে তুলনা চলে কেবল এই রায়চৌধুরী পরিবারের।

🔹 পিতামহ ➡️ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

🔹 পিতা ➡️ সুকুমার রায়।

🔹 পিসি ➡️ লীলা মজুমদার।


আরও পড়ুন : বৈষ্ণব পদাবলী সম্পর্কে ।



Srestho-Chitro-Porichalok-Satyajit-Ray

আরও পড়ুন : বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ।



🔹আজ পর্যন্ত সর্বজনস্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্র​টি তৈরির পেছনের গল্পটি হল ➡️ সামান্য কিছু যন্ত্রপাতি এবং সাধারণ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রী নিয়ে পরিচালক শুরু করলেন চলচ্চিত্রের শ্যুটিং। কিছু কাজ করার পর শেষ হয়ে গেলো সব অর্থ। বাধ্য হয়ে স্ত্রীর গহনা বন্ধক দিয়ে এবং নিজের দামি বইপত্র বিক্রি করে পুনরায় শুরু করলেন শ্যুটিং। কিন্তু তাতেও শেষ হলো না কাজ। নতুন পরিচালকের পেছনে অর্থলগ্নি করতে রাজি নন কেউ। যাই হোক, অনেক কষ্টে পুনরায় অর্থ জোগাড় করে মুভিটি শেষমেশ সম্পন্ন করা গেলো।


⏺️বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের নির্মাণশৈলী এবং পণ্ডিত রবিশংকরের অসাধারণ সংগীতের সমন্বয়ে তৈরি এই চলচ্চিত্রের  প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে শুরু করে ভারতবর্ষ তথা সমগ্র বিশ্ব। ১৯৫৬ সালের ‘কান ফিল্ম ফেস্টিভালে’ সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে নেয় এই চলচ্চিত্রটি। আর এভাবেই বিশ্বচলচ্চিত্রের বিশাল জগতে দাপুটে আবির্ভাব ঘটে এক কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকারের। 


⏺️এতোক্ষণ যে চলচ্চিত্র নিয়ে কথা হচ্ছিল তার নাম ‘পথের পাঁচালী’ এবং সেই পরিচালক ‘সত্যজিৎ রায়’


🔹 ১৯৫৫ সালে মুক্তি পায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে তৈরি চলচ্চিত্রটি।


আরও পড়ুন : শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য ।



🔹 তারপর একের পর এক তিনি চলচ্চিত্রে রূপদান করেন ⤵️

১. প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘দেবী’ (১৯৬০)

২. রাজশেখর বসুর ‘পরশপাথর’ (১৯৫৮)

৩. তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জলসাঘর’ (১৯৫৮)

৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঘরে বাইরে’ (১৯৮৪) এবং ‘নষ্টনীড়’ {‘চারুলতা' (১৯৬৪)}, 

৫. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ (১৯৭০) এবং ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ (১৯৭০)

৬. হেনরিক ইবসেনের ‘গণশত্রু’ (এন এনিমি অব দ্য পিপল), 

৭. শংকরের ‘জন-অরণ্য’ (১৯৭৬), শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চিড়িয়াখানা’ (১৯৬৭)।


🔹 নিজের চলচ্চিত্রগুলোর সঙ্গীত আয়োজনের দ্বায়িত্বও তিনি নিজের কাঁধেই তুলে নেন এবং সেখানেও যথারীতি ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেন। সঙ্গীতে তিনি রীতিমতো এক নতুন ধারার সুর নিয়ে আসেন যা শোনামাত্রই ধরে ফেলা যায় যে এটা সত্যজিৎ রায়ের সুর এবং এ ক্ষেত্রে তিনি তার শ্রেষ্ঠ কাজ দেখান গুপি-বাঘা (গুপি গাইন বাঘা বাইন, হীরক রাজার দেশে, গুপি বাঘা ফিরে এলো) ট্রিলজিতে।


আরও পড়ুন : পাঠ্যপুস্তকের বিভিন্ন চরিত্র ও তাদের বয়স ।



Srestho-Chitro-Porichalok-Satyajit-Ray




🔹 সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একমাত্র হিন্দি মুভিটি হল মুন্সী প্রেমচাঁদের কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’।


🔹 সত্যজিৎ রায় তাঁর জীবদ্দশায় প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন। তিনিই দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব যাঁকে  অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। 


🔹 প্রথম চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব হিসেবে অক্সফোর্ডের ডিলিট পেয়েছিলেন চার্লি​ চ্যাপলিন।


🔹 ১৯৮৫ সালে পান ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার।


🔹 ১৯৯২ সালে মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বেই ভারত সরকার তাঁকে প্রদান করেন দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন


আরও পড়ুন : রবীন্দ্র রচনাবলীর ইংরেজী অনুবাদ ।



Srestho-Chitro-Porichalok-Satyajit-Ray


আরও পড়ুন : একই বা প্রায় একই নামের ভিন্ন রচনা ।



তাঁর পরিচালিত কিছু চলচ্চিত্র :

১. ‘পথের পাঁচালী’ (১৯৫৫)

২. ‘অপরাজিত' (১৯৫৬)

৩. ‘জলসাঘর’ (১৯৫৮)

৪. ‘পরশ পাথর’ (১৯৫৮)

৫. ‘দেবী’ (১৯৬০)

৬. ‘তিনকন্যা’ (১৯৬১)

৭. ‘অভিযান’ (১৯৬২)

৮. ‘মহানগর’ (১৯৬৩)

৯. ‘মহাপুরুষ’ (১৯৬৫)

১০. ‘নায়ক’ (১৯৬৬)

১১. ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ (১৯৬৯)

১২. ‘অরন্যের দিবারাত্রি’ (১৯৭০)

১৩. ‘সোনার কেল্লা’ (১৯৭৪)

১৪. ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ (১৯৭৭)

১৫. ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ (১৯৭৯)

১৬. ‘হীরক রাজার দেশ’​ (১৯৮০)

১৭. ‘ঘরে বাইরে’ (১৯৮৪)

Srestho-Chitro-Porichalok-Satyajit-Ray

আরও পড়ুন : বাংলা সাহিত্যে​ ত্রয়ী বা ট্রিলজি ।


সত্যজিৎ রায়ের পুরস্কৃত কয়েকটি ছবির তালিকা :

🔹পথের পাঁচালী (১৯৫৫) 👉 রাষ্ট্রপতি স্বর্ণ ও রৌপ্যপদক (ভারত), শ্রেষ্ঠ মানব দলিল (কান,1956), গোল্ডেন কারবাও (ম্যনিলা,১৯৫৬), শ্রেষ্ঠ ছবি(ভ্যাঙ্কুবার,কানাজ,১৯৫৮),শ্রেষ্ঠ অ-ইউরোপীয় ছবি হিসেবে বদিল পুরস্কার (ডেনমার্ক,১৯৬৬), শ্রেষ্ঠ বিদেশী ছবি , কিনোমা জামপো পুরস্কার (টোকিও,১৯৬৬)।


🔹অপরাজিত (১৯৫৬) 👉 গোল্ডেন লায়ন অফ সেণ্ট মার্ক (ভেনিস,১৯৫৭), সমালোচকদের বিচারে শ্রেষ্ঠ ছবি ও পরিচালনা (সানফ্রান্সিকো,১৯৫৮), অপু ত্রয়ীর জন্য উইংটন পুরস্কার (লন্ডন,১৯৬০)।


🔹 জলসাঘর (১৯৫৮) 👉 রাষ্ট্রীয় রৌপ্যপদক (ভারত,১৯৫৮), সঙ্গীতের জন্য রৌপ্যপদক (মস্কো,১৯৫৯)।


🔹 অপুর সংসার (১৯৫৯) 👉  রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (ভারত,১৯৫৯), শ্রেষ্ঠ চৌলক এবং আবেগ প্রবণ ছবি হিসাবে সারদাল্যান্ড পুরস্কার (লন্ডন,১৯৬০)।


🔹দেবী (১৯৬০) 👉  রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (ভারত,১৯৬০)।


🔹তিনকন্যা (১৯৬১) 👉 সমাপ্তির জন্য রাষ্ট্রপতি রৌপ্যপদক (ভারত,১৯৬১)।


🔹অভিযান (১৯৬২) 👉 রাষ্ট্রপতি রৌপ্যপদক (ভারত,১৯৬২)।


🔹মহানগর (১৯৬৩) 👉 সার্টিফিকেট অফ মেরিট (ভারত,১৯৬৩), শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসাবে রৌপ্য ভালুক (বার্লিন,১৯৬৪)।


🔹চারুলতা (১৯৬৪) 👉 রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (ভারত,১৯৬৪), ক্যাথলিক পুরস্কার (বার্লিন,১৯৬৫)।


🔹নায়ক(১৯৬৬) 👉 রাষ্ট্রপতি পুরস্কার,শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য ও কাহিনী (ভারত,১৯৬৬), বিশেষ জুরি পুরস্কার (বার্লিন,১৯৬৬)।


🔹চিড়িয়াখানা (১৯৬৭) 👉 শ্রেষ্ঠ পরিচালক (ভারত,১৯৬৭)।


🔹 গুপি গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৯) 👉 রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (ভারত,১৯৬৯), শ্রেষ্ঠ পরিচালক, সিলভার ক্রস পুরস্কার (১৯৬৯), শ্রেষ্ঠ মৌলিক ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক (অকল্যান্ড,১৯৬৯)।


🔹 প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৭০) 👉 রাষ্ট্রপতি রৌপ্যপদক (ভারত,১৯৭০)।



আরও পড়ুন : “যৌবন বসন্তের কবি” বুদ্ধদেব বসু ।

Post a Comment

0 Comments