Subscribe Us

আলোচনা : অবন ঠাকুর সম্পর্কিত

জন্ম 👉 ৭ ই‌ আগষ্ট ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে।

পিতা 👉 গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

মাতা 👉 সৌদামিনী দেবী।

পত্নী 👉 ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে সুহাসিনী দেবীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

পুত্র 👉 অলোকেন্দ্রনাথ।

কন্যা 👉 সুরূপা এবং উমা।

কর্মজীবন 👉 ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজে যোগদান করেন। ভারতীয়দের মধ্যে তিনি প্রথম এই মর্যাদা লাভ করেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই কলেজের সাথে যুক্ত ছিলেন। 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাণী বাগীশ্বরীর অধ্যাপক ও ছিলেন। এই সময় তিনি শিল্প সম্পর্কিত ২৯ টি বক্তৃতা দেন। এই বক্তৃতাগুলিই পরবর্তীকালে “বাগীশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী” নামে প্রকাশিত হয়।

 ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রূপে দ্বায়িত্ব পালন করেন।

মৃত্যু 👉 ৫ ই ডিসেম্বর ১৯৫১ সালে তিনি দেহত্যাগ করেন।


আরও পড়ুন : ‘Post Card Story’-র জনক : বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়  ] 



  • ছেলেবেলায় দুষ্টুমির জন্য তাঁকে বাড়িতে  ‘বোম্বেটে’ নাম দেওয়া হয়েছিল।

  • অবনীন্দ্রনাথ সাধারন মানুষের কাছে ‘অবন ঠাকুর’ নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন।

  • অনুরাগীরা যখন তাঁকে ভালবেসে ডাকতেন ‘শিল্পগুরু’, অবনীন্দ্রনাথ নিজে বলতেন, ‘‘নামের আগে কতগুলো বিশেষণ জুড়ে দিলেই কি খুব বড়ো হয়ে যাবো!’’

  • ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে তাঁর চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে C.I.E উপাধি লাভ করেন।

  • ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডক্টর অব লিটারেচার ডিগ্রি প্রদান করে।

  • তিনি চিত্রকলার পাঠ শুরু করেন তৎকালীন আর্ট স্কুলের শিক্ষক ইতালিয় শিল্পী গিলার্ডির কাছে।

  • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুনামধন্য ছাত্ররা হলেন - নন্দলাল বসু, অসিত কুমার হালদার, সুরেন্দ্রনাথ কর, মুকুল দে প্রমুখ।

  • ভারতীয় রীতিতে তাঁর আঁকা প্রথম চিত্রাবলি “কৃষ্ণলীলা সংক্রান্ত”। এই রীতি অনুসারী চিত্র শিল্পের তিনি নব জন্মদাতা।


আরও পড়ুন : বাংলা সাহিত্যে কয়েকটি আত্মজীবনীমূলক রচনা  ]



  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর উৎসাহে তাঁর লেখালেখির শুরু। প্রথমে ‘শকুন্তলা’ লিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রশংসা পেয়ে তার পরে লিখেছিলেন ‘ক্ষীরের পুতুল’, ‘রাজকাহিনী’, ‘বুড়ো আংলা’ ইত্যাদি।

  • রবিকাকাই (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) তাঁর জীবনে অনেক কিছুর অনুপ্রেরণা। যখন তিনি ‘চিত্রাঙ্গদা’ লিখেছিলেন তখন অবনীন্দ্রনাথের উপর নির্দেশ এসেছিল ছবি দেওয়ার জন্য। 
সেই  প্রসঙ্গে অবনীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন - 
“...এই হল রবিকাকার সঙ্গে আমার প্রথম আর্ট নিয়ে যোগ। তার পর থেকে এত কাল রবিকার সঙ্গে বহু বার আর্টের ক্ষেত্রে যোগাযোগ হয়েছে, প্রেরণা পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। আজ মনে হচ্ছে আমি যা কিছু করতে পেরেছি তার মূলে ছিল তাঁর প্রেরণা।”

আরও পড়ুন : “Annal and Antiquities of Rajasthan” অবলম্বনে রচিত কয়েকটি গ্রন্থ  ] 


অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গদ্যগ্রন্থ :

১. শকুন্তলা (১৮৯৫)

২. ক্ষীরের পুতুল (১৮৯৬)

৩. রাজকাহিনী (১৯০৯)

৪. ভারতশিল্প (১৯০৯)

৫. ভূতপতীর দেশ (১৯১৫)

৬. নালক (১৯১৬)

৭. খাতাঞ্চির খাতা (১৯১৬)

৮. পথে বিপথে (১৯১৯)

৯. বাংলার ব্রত (১৯১৯)

১০. বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী (১৯২৯)

১১. বুড়ো আংলা (১৯৩৪)

১২. ঘরোয়া (১৯৪১)

১৩. জোড়াসাঁকোর ধারে (১৯৪৪)

১৪. ভারতশিল্পের ষড়ঙ্গ (১৯৪৪)

১৫. আলোর ফুলকি (১৯৪৭)

১৬. শিল্পায়ন (১৯৫৪)

১৭. রং বেরং (১৯৫৮)


  • ‘বুড়ো আংলা’ বিদেশী গল্পের কাহিনী অবলম্বনে রচনা করেন।

  • ‘আলোর ফুলকি’ ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

  •  তিনি তাঁর ‘সৌন্দর্যের সন্ধান’ প্রবন্ধে বলেছেন - “সুন্দর জিনিসের বাইরের উপকরণ আর ভিতরের পদার্থে হরিহর আত্মা। বহিরঙ্গে যা, তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ যুক্ত হয়ে সুন্দর বর্তমান হল”।

  • ১৯০৭ সালে তাঁর এবং গগনেন্দ্রনাথের উৎসাহ-উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছিল ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ ওরিয়েন্টাল আর্টস।


আরও পড়ুন : একই বা প্রায় একই নামের ভিন্ন রচনা  ] 


অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম :


১. কৃষ্ণলীলা বিষয়ক চিত্রাবলী

২. ঋতুসংহার

৩. ওমর খৈয়াম

৪. সাজাহান

৫. ব্রজমুকুট

৬. শেষযাত্রা 

৭. বুদ্ধ ও সুজাতা

৮. প্রত্যাবর্তন

৯. কবিকঙ্কন চণ্ডী

১০. বসন্তের হিমালয়

১১. ভারতমাতা

১২. কচ দেবযানী

১৩. কাজরীনৃত্য

১৪. দেবদাসী

১৫. অশোকের রাণী

আরও পড়ুন : ঊনবিংশ শতাব্দীতে শিশুদের জন্য রচিত গ্রন্থসমূহ ]


  • প্লেগে ছিনিয়ে নিয়েছিল অবন ঠাকুরের ছোট্ট মেয়েটিকে। সেই শোক ভুলতে কিছু সময়ের জন্য জোড়াসাঁকো ছেড়ে তাঁরা চৌরঙ্গীর একটা বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলেন। সেখানে বেশ কিছু পাখি পুষেছিলেন। 
সেসময় এঁকেছিলেন ‘সাজাহানের মৃত্যু’ সেই বিখ্যাত ছবিটি।
অবনীন্দ্রনাথের কথায়, ‘মেয়ের মৃত্যুর যত বেদনা বুকে ছিল সব ঢেলে দিয়ে সেই ছবি আঁকলুম।’

  • শিক্ষক অবনীন্দ্রনাথকে নিয়েও রয়েছে নানা কাহিনি। তাঁর অন্যতম প্রিয় ছাত্র নন্দলাল বসু ‘উমার তপস্যা’ নামে একটি ছবি এঁকেছিলেন। ছবিটা দেখে অবনীন্দ্রনাথ তাঁর ছাত্রকে জিজ্ঞেস করে ছিলেন - 
‘‘এত রং কম কেন? আর কিছু না কর উমাকে একটু চন্দন, ফুলটুল দিয়ে সাজিয়ে দাও।’’


আরও পড়ুন : বাংলা সাহিত্যে “শেষ” নামাঙ্কিত কয়েকটি গ্রন্থ  ]


পোস্টটি আপনার সামান্যতম উপকারে এলে, পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন । ধন্যবাদ....

Post a Comment

0 Comments