Subscribe Us

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ


জন্ম – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ই মে বাংলা ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ শে বৈশাখ।

জন্মস্থান – কলকাতার বিখ্যাত জোঁড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে।

পিতা – মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

মাতা – সারদাসুন্দরী দেবী।

পারিবারিক উপাধি – কুশারী।

পত্নী – মৃণালিনী দেবী (ভবতারিণী দেবী)।

সন্তান – ৫ সন্তান, ২ পুত্র – রথীন্দ্রনাথ ও শমীন্দ্রনাথ এবং ৩ কন্যা মাধুরীলতা, মীরা ও রেনুকা।

ছদ্মনাম – মোট ৯ টি। সেগুলি হল - ভানুসিংহ (সর্বাধিক প্রচলিত এবং জ্ঞাত), আন্নাকালী পাকড়াশী, শ্রীমতি কনিষ্ঠা, শ্রীমতি মধ্যমা, নবীন কিশোর শর্মন, দিকশূণ্য ভট্টাচার্য, বাণীবিনোদ, বিদ্যাবিনোদ এবং ষষ্ঠীচরণ দেবশর্মা।

মৃত্যু – কবিগুরু ৮০ বছর বয়সে ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ই আগষ্ট পরলোকগমন করেন।

 


  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর প্রথম রচিত কবিতা“হিন্দু মেলার উপহার” রচনা করেন ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে এবং কবিতা টি তিনি হিন্দু মেলায় পাঠ করেন।

এই কবিতা টি ১৮৭৫ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি ‘অমৃতবাজার পত্রিকা’ –য় প্রথম প্রকাশিত হয়।

 

  • কবিগুরুর লিখিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে রচিত “বনফুল”। এই কাব্যগ্রন্থ কাহিনিমূলক ৮ টি সর্গে বিভক্ত।

কাব্যগ্রন্থ টি ১২৮২ বঙ্গাব্দে মাসিক ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

কাব্যগ্রন্থ টি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১২৮৬ বঙ্গাব্দে।

 

  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ – “কবি কাহিনী”। কাব্যগ্রন্থ টি ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কাব্যগ্রন্থ :

কবিগুরুরর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলি কে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। পর্যায়ানুসারে তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হল –

সূচনা পর্যায় (১৮৭৮ – ১৮৮১) :

কবি কাহিনী

১৮৭৮

বনফুল

১৮৮০

ভগ্নহৃদয়

 


উন্মেষ পর্ব (১৮৮২ – ১৮৮৬) :

সন্ধ্যা সঙ্গীত

১৮৮২

প্রভাত সঙ্গীত

১৮৮৩

শৈশব সঙ্গীত

১৮৮৪

ছবি ও গান

১৮৮৪

ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী

১৮৮৪

কড়ি ও কোমল

১৮৮৬

 

ঐশ্বর্য পর্ব (১৮৯০ – ১৯০০) :

মানসী

১৮৯০

সোনার তরী

১৮৯৪

নদী

১৮৯৬

চিত্রা

১৮৯৬

চৈতালী

১৮৯৬

কণিকা

১৯০০

কথা ও কাহিনী

১৯০০

কল্পনা

১৯০০

ক্ষণিকা

১৯০০


 



অন্তবর্তী পর্ব (১৯০১ – ১৯২৯) :

নৈবেদ্য

১৯০১

স্মরণ

১৯০৩

শিশু

১৯০৩

উৎসর্গ

১৯০৪

খেয়া

১৯১০

গীতাঞ্জলি

১৯১০

গীতিমাল্য

১৯১৪

গীতালি

১৯১৫

বলাকা

১৯১৬

১০

পলাতকা

১৯১৮

১১

শিশু ভোলানাথ

১৯২২

১২

পূরবী

১৯২৫

১৩

লেখন

১৯২৭

১৪

মহুয়া

১৯২৯

 

 

শেষ পর্ব (১৯৩০ – ১৯৪১) :

বনবাণী

১৯৩১

পরিশেষ

১৯৩২

পুনশ্চ

১৯৩২

বিচিত্রতা

১৯৩৩

শেষ সপ্তক

১৯৩৫

বীথিকা

১৯৩৫

পত্রপুট

১৯৩৬

শ্যামলী

১৯৩৬

খাপছাড়া

১৯৩৭

১০

ছড়ার ছবি

১৯৩৭

১১

প্রান্তিক

১৯৩৮

১২

সেঁজুতি

১৯৩৮

১৩

প্রহাসিনী

১৯৩৮

১৪

আকাশ প্রদীপ

১৯৩৯

১৫

নবজাতক

১৯৪০

১৬

সানাই

১৯৪০

১৭

রোগশয্যায়

১৯৪০

১৮

আরোগ্য

১৯৪১

১৯

জন্মদিনে

১৯৪১

২০

শেষলেখা

১৯৪১

 



সন্ধ্যাসঙ্গীত (১৮৮২) :

উন্মেষ পর্ব –এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ।

এই কাব্য প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং বলেছেন –

“সন্ধ্যাসঙ্গীতের পূর্ববর্তী আমার সমস্ত কবিতা কাব্যগ্রন্থাবলী হইতে বাদ দিয়েছি।“

এই কাব্যগ্রন্থ রচনার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –এর কাছ থেকে অভিনন্দন পান।

 

প্রভাত সঙ্গীত (১৮৮৩) :

এই কাব্যগ্রন্থ –এর মোট কবিতা সংখ্যা ১৩ টি। তবে ১৩ টি কবিতার মধ্যে ৩ টি কবিতা কে রবীন্দ্রনাথ তাঁরই রচিত “সঞ্চয়িতা” –য় স্থান দিয়েছেন।

কাব্যগ্রন্থ টি কবি তাঁর ১০ বছরের ভ্রাতুষ্পুত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা দেবী কে উৎসর্গ করেন।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর উল্লেখযোগ্য কবিতা “নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ”, কবিতা টি “সঞ্চয়িতা” –তেও স্থান পেয়েছে।

“নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ”, কবিতা টি ১২৮৯ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।

 


মানসী (১৮৯০) :

এই কাব্যগ্রন্থ থেকে কবির কাব্যের সমৃদ্ধি পর্যায়।

কাব্যগ্রন্থটির প্রথম প্রকাশ কালে মোট কবিতার সংখ্যা ৬৫ টি।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর “গুরু গোবিন্দ” এবং “নিষ্ফল উপহার” কবিতা ২ টি রবীন্দ্রনাথ পরবর্তীকালে “কথা ও কাহিনী” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত করেন।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর ২০ টি কবিতা কবি “সঞ্চয়িতা” –য় স্থান দিয়েছেন।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর “উপহার” কবিতা পাঠ করে রবীন্দ্র জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় অনুমান করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কাব্যগ্রন্থ টি তাঁর বৌঠান কাদম্বরী দেবী কে উৎসর্গ করেন।

 


সোনার তরী (১৮৯৪) :

এই কাব্যগ্রন্থে মোট কবিতা সংখ্যা ৪৩ টি।

কাব্য টি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।

কাব্যগ্রন্থ টি কবি শিলাইদহে থাকাকালীন রচনা করেন।

এই কাব্যগ্রন্থে ‘সোনার’ শব্দ টি ৩ বার এবং ‘তরী’ শব্দ টি ৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কবিতা হল – “সোনার তরী”, “যেতে নাহি দেব”, “নিরুদ্দেশ যাত্রা”, “হিং টিং ছট”, “বৈষ্ণব কবিতা”।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর শেষ কবিতা “নিরুদ্দেশ যাত্রা” ‘সাধনা পত্রিকা’ –য় ১৩০০ বঙ্গাব্দের পৌষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।

 

চিত্র (১৮৯৬) :

এই কাব্যগ্রন্থ –এর মোট কবিতা সংখ্যা ৩৬। তার মধ্যে ২০ টি কবিতা কবি “সঞ্চয়িতা” –য় সংকলন করেছেন।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর ২২ টি কবিতা ইংরেজি তে অনূদিত হয়।

“ব্রাহ্মণ” এবং “জীবনদেবতা” এই কাব্যের উল্লেখযোগ্য কবিতা।

 


নৈবেদ্য (১৯০১) :

এই কাব্যগ্রন্থ টি অন্তবর্তী পর্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ।

কাব্যগ্রন্থটির রচনা কাল ১৩০৪ বঙ্গাব্দ থেকে ১৩০৭ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত।

কবি এই কাব্যগ্রন্থে ‘Universal Soul’ –এর অনুসন্ধানী।

এই কাব্যগ্রন্থ টি কবি পিতৃদেব দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কে উৎসর্গ করেন।

 


স্মরণ (১৯০৩) :

কবি কাব্যগ্রন্থ টি পত্নী মৃণালিনী দেবীর মৃত্যু কে কেন্দ্র করে রচনা করেন।

১৩০৮ বঙ্গাব্দ থেকে ১৩১০ বঙ্গাব্দের মধ্যে কবি এই কাব্যের কবিতাগুলি রচনা করেন।

 

গীতাঞ্জলি (১৯১০) :

এই কাব্যগ্রন্থে ১৫৭ টি গীতিকবিতা সংকলিত হয়েছে।

১৯০৮ থেকে ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এই কবিতাগুলি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

“গীতাঞ্জলি” কাব্যগ্রন্থ টি “Gitanjali – Songs Offerings” নামে অনূদিত হয় এবং এটি কবিগুরুর প্রথম অনূদিত ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ।

“গীতাঞ্জলি” কাব্যগ্রন্থে ১৫৭ টি কবিতা থাকলেও “Songs Offerings” –এ কেবলমাত্র ৫৩ টি কবিতা সংকলিত করেন কবি।

“Songs Offerings” –এ মূল “গীতাঞ্জলি” কাব্যগ্রন্থ –এর মাত্র ৯ টি কবিতা সংকলিত করেছিলেন।

“Songs Offerings” –এর ভূমিকা লিখেছিলেন কবি ইয়েটস।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর জন্য কবি ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ই নভেম্বর বুধবার নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু কলকাতায় তাঁর বার্তার মাধ্যমে খবর এসে পৌঁছায় ১৫ ই নভেম্বর।

 


বলাকা (১৯১৬) :

১৩২১ বঙ্গাব্দের বোইশাখ মাস থেকে ১৩২৩ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাস পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ যখন বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করছিলেন তখন কবি “বলাকা” কাব্যগ্রন্থ –এর কবিতাগুলি রচনা করেন।

“বলাকা” কাব্যগ্রন্থে মোট ৪৫ টি কবিতা রয়েছে।

এই কবিতাগুলির মধ্যে কবি ৮ টি কবিতার নাম কবি স্বয়ং দিয়েছিলেন কিন্তু বাকী কবিতাগুলি কে কবি কোন শীর্ষনামে বাঁধেন নি।

এই কাব্যগ্রন্থ –এর প্রথম কবিতা “সবুজের অভিযান”। কবিতা টি ১৩২১ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে ‘সবুজপত্র পত্রিকা’ –য় প্রকাশিত হয়।

এই কাব্যের ৩৬ নং কবিতা নাম কবিতা। কবিতা টি ১৩২২ বঙ্গাব্দের কার্তিক সংখ্যায় ‘সবুজপত্র পত্রিকা’ –য় প্রকাশিত হয়। কবিতা টি কবি শ্রীনগরে থাকাকালীন রচনা করেন।

 


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –এর উৎসর্গকৃত রচনা :

কাব্যগ্রন্থ

যাঁদের উৎসর্গ করেন

ভগ্নহৃদয়

কাদম্বরী দেবী

প্রভাত সঙ্গীত

ইন্দিরা দেবী

শৈশব সঙ্গীত

কাদম্বরী দেবী

ছবি ও গান

কাদম্বরী দেবী

ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী

কাদম্বরী দেবী

কড়ি ও কোমল

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

মানসী

মৃণালিনী দেবী

সোনার তরী

দেবেন্দ্রনাথ সেন

নদী

ভাইপো বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর

১০

চিত্রা

জীবন দেবতা (নিজের ২য় আমি)

১১

চৈতালী

পরাণ বল্লভ

১২

কণিকা

প্রমথনাথ রায়চৌধুরী

১৩

কল্পনা

শ্রীশচন্দ্র মজুমদার

১৪

ক্ষণিকা

লোকেন্দ্রনাথ পালিত

১৫

নৈবেদ্য

দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৬

স্মরণ

মৃণালিনী দেবী

১৭

উৎসর্গ

সি এফ এন্ড্রুজ

১৮

খেয়া

জগদীশ চন্দ্র বসু

১৯

গীতালি

তাঁরে (কাদম্বরী দেবী)

২০

বলাকা

উইলি পিয়ারসন

২১

পূরবী

ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো

২২

বনবাণী

জগদীশ চন্দ্র বসু

২৩

পরিশেষ

অতুলপ্রসাদ সেন

২৪

পুনশ্চ

ভাইপো নীতু

২৫

পত্রপুট

নন্দিতা ও কৃষ্ণ কৃপালিনী

২৬

শ্যামলী

রাণী মহলানবীশ

২৭

খাপছাড়া

রাজশেখর বসু

২৮

ছড়ার ছবি

প্রমিতা দেবী (বউমা)

২৯

আকাশ প্রদীপ

সুধীন্দ্রনাথ দত্ত

৩০

নবজাতক

অমিয় চক্রবর্তী

৩১

আরোগ্য

সুরেন্দ্রনাথ কর

 


আরও পড়ুন - 

উৎপল দত্ত : "ফেরারী ফৌজ" -এর রচয়িতা

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় : “পথের পাঁচালী” -র রচয়িতা

আশাপূর্ণা দেবী (গুপ্ত) : শ্রেষ্ঠ ট্রিলজি রচয়িতা

নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ

বুদ্ধদেব বসু : “যৌবন বসন্তের কবি”

সৈয়দ মুজতবা আলী  : “দেশে-বিদেশে”-র রচয়িতা

নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্র

কাজী নজরুল ইসলাম : রবীন্দ্রনাথের পর ‘প্রথম মৌলিক কবি’

বাংলা সাহিত্যে অপ্রধান মঙ্গলকাব্য ও কবি

কিছু বাংলা গ্রন্থের পূর্বনাম


To join our FB Page - CLICK HERE.

Post a Comment

0 Comments