Subscribe Us

প্রাবন্ধিক বিনয় ঘোষ

বিনয় ঘোষ

প্রাবন্ধিক বিনয় ঘোষ :

জন্ম১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুন কলকাতার মনোহরপুকুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

পিতাবিশ্বেশ্বর ঘোষ, ছিলেন একজন সামান্য কেরানী। পরে তিনি তাঁর সততা কর্মকুশলতার কারণে উচ্চতর পদে উন্নীত হন।

মাতাসরসীবালা দেবী।

পৈতৃক নিবাসতৎকালীন যশোহর জেলার বনগাঁ গোড়াপাড়া গ্রাম।

শিক্ষা জীবনতাঁর বিদ্যারম্ভ হয়েছিল পাড়ার কাছে নীরদ মাস্টারের পাঠশালায়।

পরে তিনি ক্যাথিড্রাল স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন।

ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর তিনি আশুতোষ কলেজ থেকে আই এবং অর্থনীতি তে অনার্স সহ বি পাশ করেন।

বি পাশ করার পর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস এবং সংস্কৃতি (নৃতত্ত্ব) বিষয়ে স্নাতোকত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

পরে তিনি নৃতত্ত্ব বিষয়ে প্রখ্যাত অধ্যাপক নীহার রঞ্জন রায়ের অধীনে গবেষণা করয়ার ইচ্ছে থাকলেও নানান কারণে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।

কর্ম জীবননেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর সাপ্তাহিকফরোয়ার্ড পত্রিকা’ – সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর কর্ম জীবন শুরু করেন।

এছাড়াও তিনিযুগান্তর’, দৈনিকবসুমতীএবং সাপ্তাহিকঅরণিপত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।

দাম্পত্য জীবন১৯৪১ সালে সিলেটের সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা বীণা দেবীর সাথে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়।

বীণা ঘোষ প্রায় ৩২ বছর স্যার নৃপেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন।

ছদ্মনামকালপেঁচা।

মৃত্যুমাত্র ৬৩ বছর বয়সে ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে জুলাই কলকাতায় তিনি মারা যান।

 


  • ছাত্রজীবন থেকেই তিনি মার্ক্সবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু কখনও তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সভ্যপদ নেননি।

 

  • বিনয় ঘোষ ভারতীয় গণনাট্য সংঘের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

তাঁর রচিত একমাত্র নাটকল্যাবরেটরীভারতীয় গণনাট্য সংঘের দ্বারা অভিনীত হয়েছিল।

 

  • বিনয় ঘোষের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থশিল্প সংস্কৃতি সমাজ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।

 

  • তাঁর লিখিত প্রথম গ্রন্থবিদ্রোহী ডিরোজিও”, কিন্তু এটি মুদ্রিতাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে।

 

  • বিনয় ঘোষকালপেঁচাছদ্মনামে লঘুরসাত্মক প্রবন্ধ রচনা করেন। সেগুলি হল

১। কালপেঁচার নকশা (১৯৫১)

২। কালপেঁচার দুকলম (১৯৫২)

** এই প্রবন্ধ গ্রন্থে মোট ২৯ টি প্রবন্ধ বর্তমান।

৩। কালপেঁচার বৈঠকে (১৯৫৭)

** এই প্রবন্ধ গ্রন্থে মোট ১৭ টি প্রবন্ধ বঈতমান।

 


বিনয় ঘোষ রচিত শিল্প সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধ :

শিল্প সংস্কৃতি সমাজ

১৯৪০

নতূন সাহিত্য সমালোচনা

১৯৪০

জনসভার সাহিত্য

১৯৫৫

 

 

বিনয় ঘোষ রচিত রাজনীতি বিষয়ক প্রবন্ধ :

আন্তর্জাতিক রাজনীতি

১৯৪১

ফ্যাসিজম জনযুদ্ধ

১৯৪২

সোভিয়েত সভ্যতা

১৯৪১, ১৯৪২

ভারত সোভিয়েত মধ্য এশিয়া

১৯৪৭

সোভিয়েত বিরোধী চক্রান্ত

১৯৪৮

সোভিয়েত সমাজ সংস্কৃতি

-

 

 

বিনয় ঘোষের সমাজ প্রেক্ষিতে রচিত প্রবন্ধ :

নবজাগৃতি

১৯৪৮

কলকাতা কালচার

১৯৫৩

মানব সভ্যতার ধারা

১৯৫৪

পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি

১৯৫৭

বিদ্যাসাগর বাঙালী সমাজ

১৯৫৭, ১৯৫৭, ১৯৫৯

সমাজ বিদ্যা

১৯৫৮

বিদ্রোহী ডিরোজিও

১৯৬১

টাউন কলকাতার কড়চা

১৯৬১

সাময়িক পত্রে বাংলার সমাজ চিত্র

১৯৬৮

১০

বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা

১৯৬৮

 

বিনয় ঘোষ রচিত অন্যান্য রচনা :

বরণীয় বাঙালী

১৯৫০

মেট্রোপলিটন মন

১৯৭৩

মেট্রোপলিটন মন : মধ্যবিত্ত বিদ্রোহ

১৯৭৩

বাংলার বিদ্বৎসমাজ

১৯৭৩

অটোমেটিক জীবন সমাজ

১৯৭৮

বাদশাহী আমল

১৯৭৮

নববাবুর চরিত্র

১৯৭৯

মেহনত প্রতিভা

১৯৭৯

কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত

-

১০

বাংলার লোকসংস্কৃতি সমাজতত্ত্ব

-


 

বিনয় ঘোষ রচিত উপন্যাস :

১।৩০৪

 

বিনয় ঘোষ রচিত ছোটগল্প সংকলন :

১। ডাস্টবিন (১৯৮০)

 

বিনয় ঘোষের উৎসর্গীকৃত রচনা :

১।পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি” – মাতা সরসীবালা ঘোষ।

২।বিদ্যাসাগর বাঙালী সমাজ” – পিতা বিশ্বেশর ঘোষ।

 


বিনয় ঘোষের প্রাপ্ত পুরস্কার সন্মাননা :

১।পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি” (১৯৫৭) গ্রন্থের জন্য তিনি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দেরবীন্দ্র পুরস্কারলাভ করেন।

২। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকেসরোজিনী বসু পুরস্কারপ্রদান করলে তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন

 

  • মার্ক্সীয় দৃষ্টি ভঙ্গিতে রচিত তাঁর টি প্রবন্ধ

১। শিল্প সংস্কৃতি সমাজ (১৯৪০)

২। নবজাগৃতি (১৯৪৮)

 

বিদ্যাসাগর বাঙালী সমাজ

গ্রন্থ টি টি খণ্ডে বিভক্ত।

গ্রন্থটিতে উনিশ শতকের বাংলার সামাজিক ইতিহাসের পটভূমিতে বিদ্যাসাগরের জীবন চরিত বর্ণিত হয়েছে।

 


পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি” –

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিনয় ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পরিভ্রমণ শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন জেলার, গ্রাম বাংলার অনুদ্ঘাটিত ভগ্ন ইতিহাস, জীবনযাপন পুরাবৃত্তের অনুসন্ধান করেছেন। তাঁর একটা অক্ষেপ ছিলউত্তরবঙ্গ টা তেমন করে দেখা হল না

তাঁর এই গ্রন্থে পরিভ্রমণের অভিজ্ঞতায় ফুটে উঠেছে। এই গ্রন্থ টি কে লেখক টি খণ্ডে বিভক্ত করে বিভিন্ন জেলার ইতিহাস সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন।

প্রথম খণ্ডবীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া পুরুলিয়া।

দ্বিতীয় খণ্ডেহাওড়া, হুগলী মেদনীপুর।

তৃতীয় খণ্ডেচব্বিশ পরগণা, মুর্শিদাবাদ নদীয়া গেলার ইতিহাস সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন এবং

চতুর্থ খণ্ডেএই খণ্ডে বাকী খণ্ডে প্রকাশিত জেলাগুলির বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক বিষয়ের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

 


সাময়িক পত্রে বাংলার সমাজচিত্র” –

গ্রন্থ টি খণ্ডে সমাপ্ত এক মহাকাব্যিক প্রয়াস।

গ্রন্থ টি রচনার পরিকল্পনা করেন ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে এবং সমাপ্ত করেন ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে।

এই গ্রন্থে তিনি উনিশ শতকীয় পত্র পত্রিকা ঘেঁটে সে কালের সমাজ চিত্র উপস্থাপন করেছেন।

উনিশ শতকীয় সেই পত্রিকাগুলি হল

তত্ত্ববোধনী, সংবাদ প্রভাকর, বিদ্যাদর্শন, সংবাদ ভাস্কর, সর্বশুভাকরী, সোমপ্রকাশ, বেঙ্গল স্পেকটেটর পত্রিকা।

এই গ্রন্থের শেষ অর্থাৎ পঞ্চম খণ্ড টি স্বতন্ত্র ভাবে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দেবাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারানামে প্রকাশিত হয়।


Post a Comment

2 Comments

  1. একটা কথা বলবো wow দারুন

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ

    ReplyDelete