রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর রচিত আখ্যান কাব্য :
যে শতকে বাঙালি
জনমানসে জোয়ার তুলেছিল ব্রিটিশ বিরোধী ভাবধারা, প্রতিটি স্বাধীনতাকামী শিক্ষিত অশিক্ষিত
বাঙালির হৃদয়ের কোণে ধ্বনিত হচ্ছিল মুক্তির বার্তার স্পন্দন – রঙ্গলাল সেই শতকের কবি।
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় উনিশ শতকের কবি।
জন্ম – হুগলী
জেলার বেহুলা নদীর তীরে (বেহুলা নদী গতিপথ হারানোর ফলে বর্তমান নাম দেকল বিল) মাতুলালয়
বাকুলিয়া গ্রামে ১৮২৭ খ্রিষ্টাব্দের ২১ শে ডিসেম্বর রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ
করেন।
পিতা – রামনারায়ণ
বন্দ্যোপাধ্যায়। কবি মাত্র ৮ বছর বয়সে পিতা কে হারান। পিতাকে হারানোর পর তিনি মাতুলালয়ে
বড় হয়ে উঠেন।
মাতা – হরসুন্দরী
দেবী।
আদি নিবাস – বর্তমান
হুগলী জেলার গুপ্তিপাড়ার কাছে রামেশ্বরপুর।
শিক্ষা জীবন – রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বাকুলিয়ার স্থানীয় পাঠশালায়।
প্রাথমিক
শিক্ষা শেষ করার পর তিনি মিশনারি স্কুলে ভর্তি
হন।
পাঠশালা এবং
মিশনারি স্কুলের পাঠ শেষ করে তিনি হুগলীর মহসিন কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার
কারণে তিনি তাঁর পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
কলেজে পড়ার
সময় তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি এবং ওড়িয়া কাব্যে জ্ঞান অর্জন করেন।
কর্ম জীবন – ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে
তিনি ‘এডুকেশন গেজট’ পত্রিকার সহ সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন।
তার পরের
বছর ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘বার্তাবহ’ সাপ্তাহিক পত্রিকায় সহ সম্পাদকের রূপে নিযুক্ত হন।
তারপর ১৮৬০
সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
প্রেসিডেন্সি
কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের ৬ মাস পরই তিনি ডেপুটি কালেক্টর পদে নিযুক্ত হন।
তারপর তিনি
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৮৮৪ সালের ১১ ই এপ্রিল তিনি ডেপুটি
ম্যাজিস্ট্রেটের পদ থেকে অবসর নেন।
পত্রিকা সম্পাদনা – ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় কলকাতা থেকে মাসিক
‘রসসাগর’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। পরে এই পত্রিকার নাম পরিবর্তন করে করা হয় ‘সংবাদ সাগর’।
কর্মসূত্রে
ওড়িশার কটকে থাকাকালীন তিনি ‘উৎকল দর্পন’ নামক ওড়িয়া ভাষার সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ
করেন। এই পত্রিকায় তিনি নিজে ওড়িশার প্রত্নতত্ত্ব এবং ওড়িয়া ভাষা সম্পর্কে অনেক গবেষণাধর্মী
প্রবন্ধ রচনা করেন।
মৃত্যু – ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের
১৩ ই মে মাত্র ৬০ বছর বয়সে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় পরলোকগমন করেন।
বিজয় গুপ্ত এবং তাঁর রচিত "পদ্মাপুরাণ" |
- ভূদেব চৌধুরী রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
কে “জ্ঞানযোগী” বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি রঙ্গলালের
আখ্যান কাব্যের তথা কবিতার সম্পর্কে বলেছেন –
“ঐতিহ্য সচেতনতা ও প্রাচীন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি একান্ত শ্রদ্ধা এবং স্বদেশীয় লোকের মধ্যে সেই গরিমা বোধের কামান”।
- রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ঈশ্বর গুপ্তের উত্তরসূরি এবং মধুসূদন দত্তের পূর্বসূরি।
- গুরু ঈশ্বর গুপ্তের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় রচনার মধ্য দিয়ে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিত্য জগতে পদার্পন করেন।
- রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাব্যের মধ্যেই আমরা প্রথম বীর রসব্যঞ্জক সমর সংগীত শুনতে পাই। কিন্তু তান প্রধান ছন্দে সেগুলি রচিত হওয়ায় সেগুলি বৈচিত্র্যহীন এবং একঘেয়ে হয়ে উঠেছে।
- রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানত স্কটের গদ্যকাব্য পাঠ করে বাংলা ভাষায় ঐতিহাসিক আখ্যান কাব্য রচনার প্রেরণা লাভ করেন।
- দার্শনিক পণ্ডিত হীরেন্দ্রনাথ দত্ত রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় কে “স্বাজাত্য বোধের আদ্যাচার্য্য” বলেছেন।
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত আখ্যান
কাব্য :
১। পদ্মিনী
উপাখ্যান ১৮৫৮
২। কর্মদেবী
১৮৬২
৩। শূরসুন্দরী
১৮৬৮
৪। কাঞ্চীকাবেরী
১৮৭৯
সৈয়দ আলাওল : আরাকান রাজসভার কবি |
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত সমালোচনামূলক
গ্রন্থ :
১। বাঙ্গালা
কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধ ১৮৫২ (বেথুন সভায় পঠিত)
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত রঙ্গ-ব্যঙ্গমূলক
রচনা :
১। ভেক মুষিকের
যুদ্ধ ১৮৫৮
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত অনুবাদমূলক রচনা
:
১। কুমারসম্ভব
১২৭৯ বঙ্গাব্দ
২। মেঘদূত
১৩৬৬ বঙ্গাব্দ
৩। ঋতুসংহার
১৩৬৬ বঙ্গাব্দ
৪। পার্ণেল
ও গোল্ডস্মিথের “হার্মিট” কাব্যের অনুবাদ ১৮৫৮ (‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় প্রকাশিত)
৫। নীতিকুসুমাঞ্জলি
১৮৭৫
৬। বর্ষাযাপন
(দীনকৃষ্ণ দাসের “রসকল্লোল” –এর অনুবাদ)
৭। ওমর খৈয়মের কবিতা
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত
অন্যান্য রচনা :
১। বঙ্গবিদ্যার
আদ্যবিবরণ (১২৫৬ বঙ্গাব্দ, এডুকেশন গেজেট)
২। কলিকাতা কল্পলতা
(১৩৬৬ বঙ্গাব্দ, গল্পভারতী)
৩। শরীর সাধনী
বিদ্যা শিক্ষার গুণোৎকীর্ত্তন ১৮৬০
৪। উৎকল বর্ণন
(১৮৬৩, রহস্য সন্দর্ভ)
৫। দীননাথ
দাস ১৮৬৪
৬। উপেন্দ্রভঞ্জ
(১৮৬৪, রহস্য সন্দর্ভ)
৭। ইউরোপ ও এস্যা খণ্ডস্থ প্রবাদমালা ১৮৬৯
মুন্সী প্রেমচন্দ : হিন্দি ভাষার বঙ্কিমচন্দ্র |
- রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত “কলিকাতা কল্পলতা” গ্রন্থ টি সম্ভবত বাংলা ভাষায় রচিত কলকাতার প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস। আর্টস ই-বুক হিসেবে প্রকাশিত হয় তাঁর এই কলকাতার ইতিহাস গ্রন্থ টি। তবে গ্রন্থ টি তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত।
জনশ্রুতি থেকে
সাহিত্যিক উপাদান আর নথিপত্র, বহুবিধ উৎসের তথ্য বাছ-বিচার করে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
কোলকাতার ইতিহাস রচনা করেন। নিম্নে “কলিকাতা কল্পলতা”
থেকে একটি উদ্ধৃতি দেওয়া হল –
“এক রহস্যজনক জনশ্রুতি এই যে, ইংরেজরা যখন প্রথমত এই স্থানে বাণিজ্যালয় স্থাপনার্থে আগমন করিলেন, তখন গঙ্গাতীরে দণ্ডায়মান কোন লোককে অঙ্গুলী প্রসারণ পূর্ব্বক স্থানের নাম জিজ্ঞাসা করাতে সে ব্যক্তি সেইদিকে শায়িত আক ছিন্ন বৃক্ষ দেখিয়া মনে করিল সাহেবেরা কবে ঐ বৃক্ষছেদন হিয়াছে, তাহাই জিজ্ঞাসা করিতেছেন। অতএব সে উত্তরচ্ছলে কহিল – ‘কালকাটা’। সেই হইতে ইংরেজরা ইহার নাম ‘ক্যালকাটা’ রাখিলেন”।
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত রচনাগুলির সংক্ষিপ্ত আলোচনা :
“পদ্মিনী উপাখ্যান” (১৮৫৮) –
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের
রচিত শ্রেষ্ঠ আখ্যান কাব্য।
এই কাব্যের
বিষয়বস্তু কবি কর্ণেল টডের “Annals and Antiquities of Rajasthan” (১ম খণ্ড - ১৮২৯,
২য় খণ্ড - ১৮৩২) –এর কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন।
বাংলা কাব্যের
প্রথম ইতিহাসাশ্রিত রোমান্টিক এই কাব্যে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় দেশ প্রেমের আদর্শ
প্রতিষ্ঠা করেছেন।
এই কাব্যের
প্রকাশ সম্পর্কে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ শে সেপ্টম্বর ‘হিন্দু
প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকায় লেখা হয় –
“শ্রীযুক্ত রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোচিত বীর করুণাশ্রিত উক্ত কাব্য প্রকাশিত হইয়াছে”।
বীর রসের
এই কাব্যে কবি পয়ার – ত্রিপদী – মালঝাঁপ – একাবলী ছন্দের গতানুগতিকতা কে অবলম্বন করেছেন।
এই আখ্যান
কাব্যে টমাস ম্যূরের “Glories of Brien the Brave” এবং “From
Life without Freedom” –এর ছায়াপাত ঘটেছে।
এই কাব্যের
কাহিনি বিন্যাস একঘেয়ে এবং নীরস। তবুও এই কাব্যের মাধ্যমে কবি স্বদেশবাসীর মধ্যে যে
জাতীয় গৌরব ও ভাবাবেগ সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন সেই কারণে কাব্যটির গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ
করে ক্ষত্রিয়দের প্রতি রাজার উৎসাহ বাক্য বর্তমান সময়েও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে –
“স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়।
দাসত্ব শৃঙ্খল বল, কে পরিবে পায় হে, কে পরিবে পায়”?
“কর্মদেবী” (১৮৬২) –
এই কাব্যে
আদি ও করুণ রসের উৎসার ঘটেছে।
আখ্যান কাব্য
টি ৪ টি সর্গে রচিত।
এই কাব্য
টি ব্রাহ্মণ কথক এবং কৌতূহলী শ্রোতার কথোপকথনের দ্বারা রচিত।
এই কাব্যের
মূল আখ্যান বীর শ্রেষ্ঠ যুবরাজ সাধুর সাথে রাজকন্যা কর্মদেবীর প্রণয় কাহিনি।
রঙ্গলাল
বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কর্মদেবী’ (১৮৬২) কাব্য টি মধুসূদন দত্তের ‘তিলোত্তমাসম্ভব
কাব্য’ এবং ‘মেঘনাদবধ কাব্য' প্রকাশিত হওয়ার পরে প্রকাশিত।
সুকুমার সেন এই কাব্যের
আলোচনা প্রসঙ্গে লিখেছেন –
“কর্মদেবী’ ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’ অপেক্ষা বেশি বর্ণময়। ভাষা পূর্বের মতোই তবে অলঙ্কারে মধুসূদনের অনুসরণ প্রচেষ্টা বেশ স্পষ্ট”।
এই কাব্যের
প্রথম সর্গে যুবরাজ সাধু সমস্ত বণিকদের ষড়যন্ত্রকারী এবং বিশ্বাসঘাতক বলে মনে করেন।
সাধু তাদের উদ্দেশ্যে বলেন –
“হাজার মঙ্গলাব্রতে হয়ে এস ব্রতী।
বিশ্বাস না হবে আর তোমাদের প্রতি।।
এরূপ বাণিজ্যচ্ছলে কত জাতি এসে।
করিলেক প্রভুত্ব – স্থাপন নানা দেশে”।।
“শূরসুন্দরী” (১৮৬৮) –
এটি রঙ্গলাল
বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় আখ্যান কাব্য।
এই কাব্যে
ফুটে উঠেছে রাজপুত নারীর শৌর্যগাথা।
এই আখ্যান
কাব্যে মোগলদের সাথে পাঠানদের যুদ্ধের ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে।
কর্ণেল টডের
কাহিনি অনুসরণে কাব্য টি রচিত।
আকবরের হিন্দু
নারী লোলুপতার কাহিনিই এই কাব্যের মূল ভিত্তি।
এছাড়াও এই কাব্যে সম্রাট আকবরের প্রাসাদ এবং
অন্তঃপুরের বর্ণনা প্রাধান্য লাভ করেছে।
প্রমথ চৌধুরী : বাংলা সাহিত্যের বীরবল |
“কাঞ্চীকাবেরী” (১৮৭৯) –
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ আখ্যান কাব্য।
কাব্য টি মোট ৭ টি সর্গে বিন্যস্ত।
পুরুষোত্তম দাসের প্রাচীন ওড়িশার কাব্য অনুসরণ করে কবি এই কাব্য টি রচনা করেন।
কাব্যের কাহিনি গৃহীত হয়েছে প্রতিবেশী প্রদেশ
ওড়িশার উৎকল থেকে। এই কাব্যে উৎকল প্রদেশের বীরত্বমূলক কাহিনি ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে
স্বাধীনতার জন্য গর্জে ওঠার আহ্বানমূলক কাব্য হিসেবে গণ্য।
সুকুমার সেন এই কাব্যের আলোচনা প্রসঙ্গে লিখেছেন –
“কাঞ্চীকাবেরী’র বিষয় বেশ রোমান্টিক। তাহার উপর ভক্তিরসের প্রবাহ থাকায় অধিকতর হৃদয়গ্রাহী। ভাষা সরলতর এবং ছন্দপ্রবাহ সুললিত”।
“ভেক মুষিকের যুদ্ধ” (১৮৫৮) –
বীররসাত্বক অনুবাদমূলক ব্যঙ্গ কাব্য।
এই আখ্যান কাব্য টি ধারাবাহিক ভাবে প্রথম
‘এডুকেশন গেজেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এই আখ্যান কাব্য টি
টমাস গারনেলের 'The
Battle of the Frogs and Mice' কাব্য অবলম্বনে রচনা করেন।
“নীতিকুসুমাঞ্জলি” ১৮৭৫ –
গ্রন্থ টি
২০০ সংস্কৃত উদ্ভট শ্লোকের পদ্যানুবাদ।
সংস্কৃত নীতি
ও তত্ত্বমূলক উদ্ভট কবিতার অনুবাদে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় যথেষ্ট কৃতিত্ব দেখিয়েছেন
–
“গ্রন্থগত বিদ্যা, পরহস্তগত ধন
নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন”।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর : বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী |
বাংলা কাব্য সাহিত্যে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অবদান :
বাংলা কাব্য সাহিত্যে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অবদান নিম্নে উল্লেখ করা হল –
১। বাংলা কাব্য সাহিত্যে তিনি প্রথম স্বদেশপ্রেম
নির্ভর আখ্যান কাব্য ও এই জাতীয় ক্ষুদ্র কবিতা রচনার সূত্রপাত করেন।
২। দীর্ঘদিন ধরে বাংলা কাব্য সাহিত্যে যে
দেববাদ ও ধর্মবাদ প্রাধান্য লাভ করেছিল, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সেখান থেকে সরে এসে
ঐতিহাসিক মানবীয় আখ্যান কে তাঁর কাব্যের বিশয় করেছেন।
৩। তিনি ঈশ্বর গুপ্ত এবং মধুসূদন দত্তের মধ্যে
যোগাযোগ রক্ষাকারী সেতুর মতো সদা বিরাজমান।
৪। তিনি অবাস্তব কাল্পনিক পরিবেশের স্থূল
প্রণয়লীলার স্থানে ঐতিহাসিক পটভূমিকায় দেশপ্রেম কে গ্রহণ করলেন কাব্যের বিষয় রূপে।
0 Comments