Subscribe Us

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় : “পথের পাঁচালী” -র রচয়িতা

Pather-Panchali-r-Rochoeta-Bibhutibhushan-Bandyopadhyay


“পথের পাঁচালী” -র রচয়িতা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় :


জন্ম – ১২ ই সেপ্টেম্বর ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে নদীয়া জেলার কাঁচড়াপাড়ার কাছে মুরাতিপুর ঘোষপাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে ।

পিতা – মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর প্রথম স্ত্রী হেমাঙ্গিনী মুখোপাধ্যায় নিঃসন্তান থাকায় মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় মুরাতিপুরের গুরুচরণ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা মৃণালিনী দেবী কে বিবাহ করেন । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সন্তান ।
মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় সংস্কৃত ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন এবং কাশী থেকে তিনি ‘শাস্ত্রী’ উপাধি লাভ করেছিলেন ।

মাতা – মৃণালিনী দেবী । ৫ ভাই বোনদের মধ্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সবচেয়ে বড়।

লেখকের অনান্য ভাই বোন – জাহ্নবী, ইন্দুভূষণ, সরস্বতী এবং নট্যুবিহারী ।

পৈতৃক নিবাস – ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহাকুমার অন্তর্গত ব্যারাকপুর ।

আদি নিবাস – ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহাকুমার পানিতর গ্রাম ।

পত্নী – প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী এবং দ্বিতীয় স্ত্রী রমা দেবী (কল্যাণী দেবী) ।

সন্তান – তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ।

শিক্ষা জীবন – লেখকের শিক্ষা জীবন শুরু হয় গ্রামের হরিরায়ের পাঠশালায় ।
তারপর মুরাতিপুরের বিপিন মাস্টারের পাঠশালা এবং শাগাঞ্জের  কেওটায় প্রসন্ন গুরুমশায়ের পাঠশালায় শিক্ষা অর্জন করেন ।
পরে তিনি বনগাঁ হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে ।
এই স্কুল থেকেই তিনি ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন ।
পরে কলকাতায় রিপন কলেজে (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) ভর্তি হন । ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিভাগে I.A এবং ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ডিস্টিংশন সহ B.A পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ।
তারপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন নিয়ে M.A তে ভর্তি হন এবং একই সঙ্গে আইন কলেজে আইনের ক্লাস করতে থাকেন ।

কর্ম জীবন – ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ৬ ই ফেব্রুয়ারি তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতার পেশায় নিযুক্ত হন ।

মৃত্যু – ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ১ লা নভেম্বর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটশিলায় পরলোকগমন করেন ।


আরও পড়ুন : নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ সম্পর্কে  ]



পাঁচুগোপাল বা যতীন্দ্রমোহন রায় নামে এক শিশু কবির জন্য বাধ্য হয়ে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রথম ছোটগল্প “উপেক্ষিতা” রচনার মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্য জগতে পদার্পণ করেন তিনি।
গল্পটি প্রবাসী পত্রিকায় ১৩২৮ বঙ্গাব্দের মাঘ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় ।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস “পথের পাঁচালী” উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত বিচিত্রা পত্রিকায় ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের আষাঢ় সংখ্যা থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করে ।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ “মেঘমল্লার” ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় ।

সজনীকান্ত দাসের উৎসাহে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর থেকে সাপ্তাহিক চলচ্চিত্র পত্রিকা প্রকাশ হতে শুরু হয় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ।
১৮ টি সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার পর পত্রিকাটির প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায় ।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত উপন্যাস :

পথের পাঁচালী ১৯২৯
অপরাজিত ১৯৩২
দৃষ্টিপ্রদীপ ১৯৩৫
আরণ্যক ১৯৩৯
আদর্শ হিন্দু হোটেল ১৯৪০
বিপিনের সংসার ১৯৪১
দুই বাড়ি ১৯৪১
অনুবর্তন ১৯৪২
দেবযান ১৯৪৪
কেদার রাজা ১৯৪৫
অথৈ জল ১৯৪৭
ইছামতী ১৯৫০
দম্পতি ১৯৫২
অশনি সংকেত ১৯৫৯


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত শিশু সাহিত্য :

চাঁদের পাহাড় ১৯৩৭
মরণের ডঙ্কা বাজে ১৯৪০
মিসমিদের কবজ ১৯৪২
হীরামানিক জ্বলে ১৯৪৬


আরও পড়ুন : “যৌবন বসন্তের কবি” বুদ্ধদেব বসু সম্পর্কে  ]


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত গল্পগ্রন্থ :

মেঘমল্লার ১৯৩১
মৌরীফুল ১৯৩২
যাত্রাবদল ১৯৩৪
জন্ম ও মৃত্যু ১৯৩৭
কিন্নর দল ১৯৩৮
বেনীগির ফুলবাড়ি ১৯৪১
নবাগত ১৯৪৪
তালনবমী ১৯৪৪
উপলখণ্ড ১৯৪৫
বিধূমাস্টার ১৯৪৫
ক্ষণভঙ্গুর ১৯৪৫
মুখোশ ও মুখশ্রী ১৯৪৭
নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব ১৯৪৮
জ্যোতিরঙ্গন ১৯৪৯
কুশল পাহাড়ী ১৯৫০
রূপ হলুদ ১৯৫৭
অনুসন্ধান ১৯৬০
ছায়াছবি ১৯৬০
তাঁর “নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব” গল্পগ্রন্থ টি প্রথম প্রকাশিত হয় “আচার্য কৃপালনী কলোনী” নামে ।


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ভ্রমণ কাহিনী :

অভিযাত্রিক ১৯৪১
বনে পাহাড়ে ১৯৪৫


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত দিনলিপি :

স্মৃতির রেখা ১৯৪১
তৃণাঙ্কুর ১৯৪৩
ঊর্মিমুখর ১৯৪৪
উৎকর্ণ ১৯৪৬
হে অরণ্য কথা কও ১৯৪৮
অন্তরঙ্গ দিনলিপি ১৯৭৬

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত প্রবন্ধ :

আমার লেখা ১৯৬১


আরও পড়ুন : “দেশে-বিদেশে”-র রচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলী সম্পর্কে 


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত বারোয়ারি উপন্যাস :

কো এডুকেশন ১৯৪০
মীনকেতুর কৌতুক ১৯৪১
পঞ্চদশী ১৯৪১
সুন্দর বনে সাত বছর ১৯৫২ (ভুবনমোহন রায়ের সাথে রচিত)
অনশ্বর ১৯৭২ (গজেন্দ্র কুমার মিত্র এবং তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রকাশিত । গ্রন্থের ১৮ টি অধ্যায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচনা করেন)

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “পথের পাঁচালী” এবং “অপরাজিত” (দুই খণ্ড) এই তিন খণ্ড একত্রে মহাকাব্যমূলক উপন্যাস

জিতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (ভূমিকা, বিভূতিভূষণ গল্পগ্রন্থ, প্রথম খণ্ড) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্পগুলিকে ৬ টি বিভাগে ভাগ করেছেন । যথা –

১. চরিত্র নির্ভর গল্প :

উপেক্ষিতা,
ডাইনী,
মৌরীফুল,
উমারাণী ইত্যাদি ।


২. অলৌকিক রসের গল্প :

অভিশপ্ত,
ভৌতিক পালঙ্ক,
হাসি,
বউচণ্ডীর মাঠ,
খুঁটিদেবতা,
মশলাভূত ইত্যাদি ।


৩. কাহিনী নির্ভর গল্প :

বিপদ,
এমনিই হয়,
পুঁইমাচা,
তিরোলের বালা,
খুকীর কাণ্ড,
বাক্সবদল ইত্যাদি ।


৪. জীবনধারা ভিত্তিক গল্প :

মুশকিল,
ভির,
হাট,
দিবাবসান,
আমোদ ইত্যাদি ।


৫. রোমান্টিক গল্প :

মেঘমল্লার,
শেষ লেখা,
নাস্তিক,
স্বপ্ন বাসুদেব,
রাজপুত্র ইত্যাদি ।


৬. ক্ষণোদ্ভাস ভিত্তিক গল্প :

গল্প নয়,
জলসত্র,
নদীর ধারে বাড়ি,
আহ্বান ইত্যাদি ।


আরও পড়ুন : নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্র সম্পর্কে 


“পথের পাঁচালী” (১৯২৯) :

ভাগলপুরে থাকার সময় ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি উপন্যাস টি লিখতে শুরু করেন ।
উপন্যাস টি ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মহালয়ার দিনে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ।
এই উপন্যাসের মূল সুর রোপিত ছিল তাঁর রচিত “পুঁইমাচা” গল্পে ।
রোমা রোলাঁর “Jean Christophe” -র সাথে এই উপন্যাসের বিশেষ সাদৃশ্য রয়েছে ।
এই উপন্যাস সম্পর্কে ১৩৪০ বঙ্গাব্দের 'পরিচয়' পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন –
“বইখানা দাঁড়িয়ে আছে আপন সত্যের জোরে । এই বইখানিতে পেয়েছি যথার্থ গল্পের স্বাদ । এর থেকে শিক্ষা হয়নি, কিছুই দেখা হয়েছে অনেক যা পূর্বে এমন করে দেখিনি।”
এই উপন্যাস প্রসঙ্গে বিভূতিভূষণ জানিয়েছেন –
“পথের পাঁচালী’-র গ্রাম্য চিত্রগুলি সবই আমার স্বগ্রাম বারাকপুরের।”
লেখক এই উপন্যাসের দুর্গা চরিত্রের পরিকল্পনা করেন ভাগলপুরের এক তরুণীকে দেখে । এই প্রসঙ্গে লেখক লিখেছিলেন –
“পথের পাঁচালী’ যখন প্রথম লিখি তাতে দুর্গা ছিল না, শুধু অপু ছিল । একদিন হঠাৎ ভাগলপুরের রঘুনন্দন হল-এ একটি মেয়েকে দেখি । চুলগুলি তার হাওয়ায় উড়ছে । সে আমার দৃষ্টি এবং মন দুই-ই আকর্ষণ করল তার ছাপ মনের মধ্যে আঁকা হয়ে গেল, মনে হল উপন্যাসে এই মেয়েকে না আনলে চলবে না।”


“অপরাজিত” (১৯৩২) :

“পথের পাঁচালী” উপন্যাসের যেখানে শেষ এই উপন্যাস টি সেখান থেকেই শুরু ।
প্রবাসী পত্রিকায় উপন্যাস টি ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের পৌষ সংখ্যা থেকে ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের আশ্বিন সংখ্যা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
ইসলামপুরের বনভূমি এবং ব্যারাকপুরের প্রাকৃতিক শোভায় মুগ্ধ হয়ে বিভূতিভূষণ এই উপন্যাস টি রচনা করেন।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় “পথের পাঁচালী” এবং “অপরাজিত” উপন্যাসের শেষ পর্ব “কাজল” রচনার পরিকল্পনা করেছিলেন, এবং “কাজল কেন লিখব” নামে একটি ভূমিকা অংশ লেখক একটি পত্রিকায় রচনা করেন ।
কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তিনি তা সমাপ্ত করতে পারেননি । পরবর্তী সময়ে তা সমাপ্ত করেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়


আরও পড়ুন : “স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ”-এর কবি সম্পর্কে 


“আরণ্যক” (১৯৩৯) :

মানুষ নয়, অরণ্যই এই উপন্যাসের পটভূমি রচনা করেছে ।
১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে লেখক খোলাৎচন্দ্র ঘোষ কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার রূপে ভাগলপুরে যান । এবং তাঁকে প্রায় দিয়া, ইসলামপুরের জঙ্গল পরিদর্শনে যেতে হত । তাঁর এই দিনগুলির কথায় এই উপন্যাসে ধরা পড়েছে ।
এই উপন্যাস প্রসঙ্গে পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন –
“ বিভূতিভূষণ আজ থেকে পঞ্চাশ বছরেরও বেশি আগে ‘উন্নতি’ সম্পর্কে মৌলিক প্রশ্ন তুলেছিলেন এ উপন্যাসে । আমাদের এখানে সবুজ আন্দোলনের তিনিই প্রথম অভিযাত্রী । ‘আরণ্যক’ ওই প্রচলিত‘উন্নতি’ -র তীব্র প্রতিবাদ।”


“আদর্শ হিন্দু হোটেল” (১৯৪০) :

রানাঘাটের একটি হোটেল কে কেন্দ্র করে রূপকথার ঢঙে লেখক এই উপন্যাস টি রচনা করেন ।
উপন্যাসে পদ্ম এবং হাজারি ঠাকুর কে কেন্দ্র করেই কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ।


“অভিযাত্রিক” (১৯৪১) :

আগরতলা, ঢাকা, নোয়াখালী, চন্দ্রনাথ পাহাড়, মন্দির বিভিন্ন স্থানের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার চিত্র ফুটে উঠেছে তাঁর এই ভ্রমণকাহিনীমূলক রচনায় ।


“দুই বাড়ি” (১৯৪১) :

এই উপন্যাসে রয়েছে রামনগর শহরের যুবক নিধিরাম মোক্তারের কলকাতা থেকে আসা লালবিহারী বাবুর মেয়ে সুশিক্ষিতা তরুণী মঞ্জুর সঙ্গে অন্তরঙ্গতা ও ভালোবাসার কাহিনী ।


আরও পড়ুন : রবীন্দ্রনাথের পর ‘প্রথম মৌলিক কবি’ সম্পর্কে 



“বিপিনের সংসার” (১৯৪১) :

পৈতৃক পেশা নায়েবের চাকরি ছেড়ে যুবক বিপিনের চাকরি করা এবং সুযোগমতো রুগীর লোকজনের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের কাহিনী রয়েছে এই উপন্যাসে ।


“অনুবর্তন” (১৯৪২) :

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় ফিরে “খোলাৎচন্দ্র ক্যালকাটা ইন্সটিটিউশনে” শিক্ষকতার পেশায় নিযুক্ত হন । লেখক তাঁর অভিজ্ঞতা এবং মর্ডান ইন্সটিটিউশনের শিক্ষকদের প্রাত্যহিক জীবন ও তৎকালীন পরিবেশ নিয়ে উপন্যাস টি রচনা করেন ।


“কেদার রাজা” (১৯৪৫) :

চাঁচড়ার দশমহাবিদ্যার মন্দির পরিদর্শন এবং কিংবদন্তি শোনার ফলশ্রুতি এই উপন্যাস ।


অথৈ জল” (১৯৪৭) :

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.এ পাশ করা ডাক্তার শশাঙ্কের পদস্খলনের কাহিনী এই উপন্যাসে স্হান পেয়েছে ।


“ইছামতী” (১৯৫০) :

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় খোলাৎচন্দ্র ইন্সটিটিউশনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সস্ত্রীক ব্যারাকপুর ফিরে আসেন ।
ব্যারাকপুর গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী নদীর দুই তীরের মানুষজন এবং তাদের সমাজ জীবনের কাহিনী, নীলকুঠি ও নীলচাষ সংক্রান্ত নানা ঘটনার তরঙ্গ ভঙ্গে উপন্যাস টি রচিত ।
এই উপন্যাসটির জন্য বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে মরনোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন ।


“অশনি সংকেত” (১৯৫৯) :

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর প্রভাবে গ্রাম বাংলায় ১৩৫০ বঙ্গাব্দে যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তার যথাযথ বিষাদান্ত ঐতিহাসিক চিত্র এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে ।


“পুঁইমাচা” :

গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম গল্পগ্রন্থ “মেঘমল্লার” -এর অন্তর্ভুক্ত ।
১৩৩১ বঙ্গাব্দের মাঘ সংখ্যায় গল্পটি প্রবাসী পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ।
গল্পটি প্রসঙ্গে ড. সুকুমার সেন বলেছেন –
“গল্পটি 'পথের পাঁচালী' – র বীজ।”
চরিত্র – অন্নপূর্ণা, ক্ষেন্তী, সহায়হরি চাটুয্যে প্রমুখ ।


“ভণ্ডুল মামার বাড়ি” :

গল্পটি “যাত্রাবদল” (১৩৪১) গল্পগ্রন্থের অর্ন্তগত ।
গ্রাম্য জীবনের ট্র্যাজেডি ফুটে উঠেছে এই গল্পে ।
ভণ্ডুল মামা সমস্ত জীবন সঞ্চয় করে গ্রামের এক জঙ্গলে বাড়ি তৈরি করেন । শহুরে পুত্ররা কেউ সেই বাড়িতে এল না । নির্জন সেই বাড়িতে ভণ্ডুল মামা মারা গেলেন ।


আরও পড়ুন : বাংলা সাহিত্যে অপ্রধান মঙ্গলকাব্য ও কবি  ]


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় উৎসর্গীকৃত রচনা :

“পথের পাঁচালী” – পিতৃদেব মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় কে ।
“অপরাজিত” – মাতৃদেবী মৃণালিনী দেবী কে ।
“চাঁদের পাহাড়” – খুকু কে ।
“আরণ্যক” – প্রথম পত্নী গৌরী দেবী কে ।
“আদর্শ হিন্দু হোটেল” – নটুবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় কে ।
“বিপিনের সংসার” – চারুচন্দ্র মুখোপাধ্যায় কে ।
“দেবযান” – ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কে ।
“কেদার রাজা” – নীরদরঞ্জন দাশগুপ্ত কে ।
“ইছামতী” – দ্বিতীয় পত্নী রমা দেবী কে ।
“স্মৃতির রেখা” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন ।


আরও পড়ুন : প্রথম বাংলা দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক সম্পর্কে  ]


বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রচনা :

“পথের পাঁচালী” – বিচিত্রা পত্রিকা ।
“অপরাজিত” – প্রবাসী পত্রিকা ।
“দৃষ্টিপ্রদীপ” – প্রবাসী পত্রিকা ।
“আরণ্যক” – প্রবাসী পত্রিকা ।
“আদর্শ হিন্দু হোটেল” – মাতৃভূমি পত্রিকা ।
“কেদার রাজা” – মাতৃভূমি পত্রিকা ।
“অথৈ জল' – প্রভাতী পত্রিকা ।
“ইছামতি” – অভ্যুদয় পত্রিকা ।
“চাঁদের পাহাড়” – মৌচাক পত্রিকা ।
“মরণের ডঙ্কা বাজে” – মৌচাক পত্রিকা ।
“পুঁইমাচা” – প্রবাসী পত্রিকা ।
“মৌরীফুল” – প্রবাসী পত্রিকা ।

আরও পড়ুন : বস্তুপণ্যের প্রচারে প্রথম প্রদেয় পুরস্কার 


যোগাযোগ :
contact@banglasahitto.in
t.me/banglasahitto
twitter.com/banglasahitto
fb.me/banglasahitto.in

Post a Comment

0 Comments